মঞ্চ নাটক ও চলচ্চিত্র

ঢাবির টিএসসিতে পালানাটক "বনের মেয়ে পাখী" মঞ্চায়ন

রচনা: কাজী নজরুল ইসলাম, নাট্যভাবনা ও পরিকল্পনা: ড. ইঞ্জিনিয়ার খালেকুজ্জামান, নির্দেশনা: সাজ্জাদ সাজু, প্রযোজনা: বাঁশরী - একটি নজরুল চর্চা কেন্দ্র।

২৩শে সেপ্টেম্বর ২০২৩ শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অডিটোরিয়ামে বাঁশরীর প্রযোজনায় এবং সাজ্জাদ সাজুর নির্দেশনায় বাঁশরী রেপার্টরির ব্যানারে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত পালানাটক "বনের মেয়ে পাখী" মঞ্চায়ন করা হয়। ব্যাপক দর্শক সমাগমের মধ্য দিয়ে নাটকটি পরিবেশিত হয়।

 

নাটকটির কাহিনী অনুসারে, রায়গড়ের পাহাড় ও জঙ্গলাকীর্ণ পথে বাঘের আনাগোনা প্রবল। সেই শ্বাপদসংকুল পথে পালকিবাহী বেহাড়া দল বাঘের আক্রমণের শিকার হয়। জানের মায়ায় পালকি ফেলে রেখে তারা পালিয়ে যায়। আর পালকির অভ্যন্তরে নারী কণ্ঠের আর্তনাদে ছুটে আসে সাপুড়ে ভগুলাল। বাঘের সঙ্গে লড়াই করে সে উদ্ধার করে এক শিশুকন্যাকে।


কিন্তু শিশুটির মাকে বাঁচাতে পারে না ভগুলাল। শিশুটিকে আগলে রেখে তার দেখভালের দায়িত্ব নেয় বাঘা ভগুলাল। তার নাম রাখে পাখি, বনের মেয়ে পাখি। ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠে সে। সর্পদেবী মনসার কৃপায় পাখি পেয়ে যায় যে কোনো ব্যাধি সারাবার অলৌকিক ক্ষমতা। সেই সঙ্গে তার জীবনে যুক্ত হয় সুজন নামের জীবনসঙ্গী। মনসার বরে প্রাপ্ত ক্ষমতা পাখিকে নিয়ে চলে তার হারানো পরিচয় পুনরুদ্ধারের পথে।

 

আরো পড়ুন

ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে বাঁশরী'র আয়োজনে বসন্ত উৎসবে নৃত্যনাট্য 'বনের বেদে'

বনের বেদে কাজী নজরুল ইসলাম রচিত নৃত্যনাট্যধর্মী একটি নাটক। ১৮ ফাল্গুন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ/২ মার্চ ২০২৪ শনিবার এক বসন্তের বিকেলে ঢাকার ধানমন্ডিতে অবস্থিত রবীন্দ্র সরোবরে বাঁশরী – একটি নজরুল চর্চা কেন্দ্র’র আয়োজনে “বাঁশরী’র বসন্ত উৎসব" শীর্ষক একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক উৎসবে এ নাটকটি পরিবেশন করা হয়।

মানস কুমার এর নেতৃত্বে ময়মংসিংহের নৃত্য সংগঠন “নৃত্যগ্রাফ” নাটকটি মঞ্চস্থ করে।

আরো পড়ুন

শিল্পকলা একাডেমিতে নজরুল রচিত ‘আলেয়া’ নাটকের প্রিভিউ শো

গত ৯ জুলাই, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭.৩০টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, সেগুনবাগিচায় বাঁশরী রেপার্টরি থিয়েটার এর পরিবেশনায় মঞ্চস্থ হয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত নাটক ''আলেয়া"। কাজী নজরুল ইসলাম ১৯৩১ ‘আলেয়া’ নাটকটি রচনা করেন। সংলাপ, গীত ও কাব্যের সংমিশ্রণে রচিত এটি একটি প্রেমধর্মী আখ্যান। এ নাটকটি তৎকালীন কলকাতার সেরা রঙ্গালয় নাট্য নিকেতনে ১৯৩১ সালের ১৯ ডিসেম্বর প্রথম মঞ্চায়নের দীর্ঘ পর বাঁশরী এটিকে মঞ্চে নিয়ে আসে। নাটকটি পরিচালনা করেন স্বনামধন্য নাট্য নির্দেশক জনাব গোলাম সরোয়ার এবং নাট্যভাবনা ও পরিকল্পনায় ড. ইঞ্জিনিয়ার খালেকুজ্জমান।


নাটকটির রচয়িতা কাজী নজরুল ইসলামের ভাষ্যে আলেয়া নাটকের কথা

এই ধূলির ধরায় প্রেম ভালোবাসা- আলেয়ার আলো। সিক্ত হৃদয়ের জলাভূমিতে এর জন্ম। ভ্রান্ত পথিকের পথ হতে পথান্তরে নিয়ে যাওয়াই এর ধর্ম। দুঃখী মানব এরই লেলিহান শিখায় পতঙ্গের মত ঝাঁপিয়ে পড়ে। তিনটি পুরুষ, তিনটি নারী-চিরকালের নর-নারীর প্রতীক- এই আগুনে দগ্ধ হল, তাই নিয়ে এই গীতি-নাট্য।


তিনটি পুরুষ

মীনকেতূ – রূপ-সুন্দর

চন্দ্রকেতু – মহিলা-সুন্দর, ত্যাগ-সুন্দর

উগ্রাদিত্য – শক্তি-মাতাল

তিনটি নারী

কৃষ্ণা – চিরকালের ব্যর্থপ্রেম নারী, জীবনে সে কাউকে ভালবাসতে পারলে না- এই তার জীবনের চরম দুঃখ।

জয়ন্তী – যে-তেজে যে-শক্তিতে নারী রাণী হয়, নারীর সেই তেজ, সেই শক্তি।

চন্দ্রিকা – চিরকালের কুসুম-পেলব প্রাণ চঞ্চল নারী, যে শুধু পৌরুষ-কঠোর পুরুষকে ভালোবাসতে চায়! মরুভূমির পরে যে বনশ্রী, সংগ্রামের শেষে যে কল্যাণ, এ তাই। এরই তপস্যায় পশু-নর মানুষ হয়, মৃত্যু-পথের পথিক যে প্রাণ পায়।….

নারীর হৃদয়- তাদের ভালোবাসা কুহেলিকাময়। এও এক আলেয়া। এ যে কখন কা’কে পথ ভোলায়, কখন কা’কে চায়, তা চির-রহস্যের তিমিরে আচ্ছন্ন।

যাকে সে চিরকাল অবহেলা করে এসেছে- তাকেই সে ফিরে পেতে চায় তার চলে যাওয়ার পরে। যাকে সে চিরকাল চেয়েছে – সেই তখন তার চলে-যাওয়া প্রতিদ্বন্দ্বীর পিছনে পড়ে যায়।


নাটকটির কুশীলবগণ

মীনকেতূ: রমিজ রাজু, কৃষ্ণা: শারমীন সঞ্জিদা খানম (পিয়া), চন্দ্রকেতু: এ কে আজাদ সেতু, জয়ন্তী: সৈয়দা শামছি আরা (সায়েকা), উগ্রাদিত্য: দীপু মাহমুদ/ সফিউল আজম, চন্দ্রিকা: এস এম নাজনীন মোনালিসা/ চন্দ্রিকা দেয়া, মধুশ্রবা: মোঃ ফখরুজ্জমান চৌধুরী, রঙ্গনাথ: রাজিব রেজা/মামুন, সহ-সেনাপতি: মোঃ নাজমুল হুদা বাবু, কাকলি: চন্দ্রিমা দেয়া/মোনালিসা, মালা: প্রজ্ঞা, মদালসা: সানজানা, বাইজী: প্রজ্ঞা/রিনি/সারিকা, রাজ প্রহরী: মোঃ সফিউল আজম, আনিসুর রহমান, পার্থ সরকার, নিথর মাহবুব, প্রমোদ বালিকা ও যোগিনী দল মেহেরান সানজানা, হাসিনা আক্তার নিপা, পৃথুলা দত্ত প্রজ্ঞা, হুমায়রা শারিফা, রিনি রেজা, মৌসুমি বেগম ঢাকাইয়া, চন্দ্রিমা দেয়া, মোনালিসা, লাভলী।


নাটকটির নেপথ্যে

নাট্যনির্দেশক: গোলাম সরোয়ার, পোশাক পরিকল্পনা: আইরিন পারভীন লোপা, মঞ্চপরিকল্পনা: জুনায়েদ ইউসুফ, সহযোগী পরিকল্পনা: ফজলে রাব্বি সুকর্ণো, আবহ সংগীত পরিকল্পনা: পরিমল মজুমদার, হামিদুর রহমান পাপ্পু

কোরিওগ্রাফি: এম আর ওয়াসেক, সহযোগী: জয়নুল ইসলাম সৈকত, আলোক পরিকল্পনা: অম্লান বিশ্বাস, অঙ্গ রচনা: শুভাশীষ দত্ত তন্ময়, প্রোপ্স তৈরি: শরিফুল ইসলাম মামুন, পোশাক প্রস্তুতকারী: গোলাম রব্বানী ইমরান, সেট প্রস্তুতকারী: আশিষ মণ্ডল, মঞ্চ ব্যবস্থাপনা: শরিফুল ইসলাম মামুন, গীতি দল: গৌরি নন্দী, গুলে ফেরদৌস লতা, পৃথুলা দত্ত প্রজ্ঞা, নওশীন তাবাসসুম অমি, রাজিয়া সুলতানা মিশি, কণ্ঠ সংগীত পরিচালনা ফয়সাল আহমেদ

বাণীবদ্ধকরণ: বাঁশরী স্টুডিও

সার্বিক ব্যবস্থাপনা: বাঁশরী- একটি নজরুল চর্চা কেন্দ্র।

আরো পড়ুন

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীতে কাজী নজরুল ইসলাম রচিত নাটক "সেতু-বন্ধ"

গত ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, মঙ্গলবার বাঁশরী রেপার্টরি থিয়েটারের ব্যানারে কাজী নজরুল ইসলাম রচিত "সেতু-বন্ধ" নাটকের প্রথম শো বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে সন্ধ্যা ৭টায় অনুষ্ঠিত হয়। নাটকটির নির্দেশনায় ছিলেন স্বনামধন্য নাট্য ব্যক্তিত্ব গোলাম সরোয়ার। নাটকটি নির্মাণের বিভিন্ন দায়িত্ব ও অভিনয়ে ছিলেন সুপরিচিত ও দক্ষ নাট্য শিল্পীগণ।


“সেতু-বন্ধ” প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষা বিষয়ক নাটক। বাঁধ দিয়ে নদীর গতিপথ পরিবর্তন করার বিরুদ্ধে এই নাটক। পৃথিবীর দেশে দেশে নদী ধ্বংসের প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাঁধ দিয়ে নদীর পানি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে, মাটি ও বর্জ্য ফেলে নদী ভরাট করা হচ্ছে, কল-কারখানার বর্জ্য ফেলে নদীর পানি দূষিত করা হচ্ছে। ফলশ্রুতিতে অনেক নদীর অস্তিত্ব আজ হুমকির সম্মুখীন। পরিণতিতে নদীর অববাহিকায় প্রকৃতি ও কৃষি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে, খাবার পানির সংকট দেখা দিচ্ছে এবং মানুষের জীবন ও জীবিকা ব্যাহত হচ্ছে। বাংলাদেশ, ভারত, চীন, তুরস্ক, ইথিওপিয়াসহ বিভিন্ন দেশে নদীতে বাঁধ দেওয়ার ঘটনা ঘটছে। বাঁধ দেওয়ার পক্ষে ক্ষমতাধর অপশক্তি নানা যুক্তি উত্থাপন করছেন। বাঁধ দিয়ে পদ্মা নদীর প্রবাহ বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনার পরিপ্রেক্ষিতে কবি ১৯৩০ সালের দিকে রচনা করেছিলেন নাটক “সেতু-বন্ধ”। নাটকটি রচনার প্রায় শত বছর পরে বাঁশরী রেপার্টরি থিয়েটার এটি মঞ্চস্থ করার উদ্যোগ গ্রহণ করে।


সেতু-বন্ধ নাটকের কাহিনী সংক্ষেপ:

স্বর্গের দেবী পদ্মা জানতে পারে স্বচ্ছ জলরাশি নিয়ে প্রবাহিত পদ্মা নদীতে যন্ত্রদানবকুল বাঁধ নির্মাণের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। পদ্মা দেবী এই অপমান সইবে না। পদ্মার গতিবেগ রুখে দিয়ে জলাশয়কে নষ্ট করে দেওয়ার দানবকুলের অভিলাষকে রুখে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে মেঘরাজ পবন ও অন্যান্য দেবতাদের সহায়তা প্রত্যাশা করেন। মেঘরাজ, পবন, ঝঞ্ঝা, তরঙ্গ সেনাদল নিয়ে পদ্মা দেবীর সহায়তায় এগিয়ে আসে মেঘদেবী। শুরু হয় তুমুল লড়াই। লড়াইয়ে বিধ্বস্ত হয়ে যায় দানবকুলের ষড়যন্ত্র, স্বর্গরাজ্যে প্রবেশের সকল প্রচেষ্টা হয়ে যায় ব্যর্থ। তবুও মৃত্যু-কাতর কণ্ঠে যন্ত্রদানব উচ্চারণ করে আমার মৃত্যু নেই দেবী, আমি আবার নতুন দেহ নিয়ে ফিরে আসব। পদ্মা দেবীও জবাব দেয়, জানি যন্ত্ররাজ তুমি বারে বারে আসবে কিন্তু প্রতিবারেই তোমার এভাবে মৃত্যুদণ্ড নিয়ে ফিরে যেতে হবে। 

 

আরো পড়ুন

কাজী নজরুল ইসলাম রচিত নাটক "ঈদল ফেতর"

নাটক: ঈদল ফেতর, রচনা: কাজী নজরুল ইসলাম, চিত্রনাট্য: আবুল হায়াত, পরিচালনা: মাসুদ চৌধুরী, প্রযোজনা: বাঁশরী - একটি নজরুল চর্চা কেন্দ্র, অভিনয়ে: শতাব্দী ওয়াদুদ, আজাদ আবুল কালাম, দীপা খন্দকার, শফিক খান দিলু , রিমু রোজা খন্দকার ও শিশু শিল্পী সুষময় প্রমুখ।

আরো পড়ুন

ডকুফিল্ম “রাজবন্দীর জবানবন্দী”

নজরুলের “রাজবন্দীর জবানবন্দী”র ওপর ভিত্তি করে বাঁশরী একটি ডকুফিল্ম তৈরি করেছে। এতে মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন রামিজ রাজু ও সাদিয়া ইসলাম। দেবী সুচিত্রা হাজং-এর স্মৃতির প্রতি নিবেদিত বাঁশরী - একটি নজরুল চর্চা কেন্দ্র প্রযোজিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ''রাজবন্দীর জবানবন্দী'' অবলম্বনে ডকুফিল্ম ''রাজবন্দীর জবানবন্দী'' মূল ভাবনা: ইঞ্জিনিয়ার ড. খালেকুজ্জামান চিত্রনাট্য: দেবী সুচিত্রা হাজং গবেষণা: দেবী সুচিত্রা হাজং ও জাকির হোসেন। 

অভিনয়ে: বিচারক- মোহাম্মদ বারী, বীরজা সুন্দরী: আরজুমান্দ আরা বকুল, কাজী নজরুল ইসলাম: রামিজ রাজু, প্রমীলা: সাদিয়া ইসলাম, কমরেড মুজফফর আহমদ: সুমন শেখ,  পবিত্র গঙ্গোপাধ্যায়: সাব্বির হোসেন জাকির, রাজপক্ষের উকিল: শাহিন মোঃ আমানউল্লাহ, পেশকার সাথী রঞ্জন দে: আফজালুল হক, জাহাঙ্গীর আলম ঢালী: আব্দুল হালিম, শিশির রহমান বিপিন পাল: মুশফিক শিহাব, মৃণাল বাবু: নাসির উদ্দিন, উজ্জল শান্তি পদ: আবির সায়েম, গোপীনাথ: মাহমুদ শাকিল, গুপ্তচর: আরিফ মোড়ল, গিরিবালা: ফরিদা ইয়াসমিন, রিতা চার্লস টেগার্ট: নূরুজ্জামান বাবু পুলিশ অফিসার: মাজেদুল ইসলাম মিঠু মলিন উকিল: সাইদুর রহমান মানিক নাসিহ স্যার: সেন্টু সরকার রাজনৈতিক কর্মী: রানা শিকদার, রাজনৈতিক কর্মী: আলতাফ রবিন পরিমল, সোহাগ ধর, জিতেন কাকা: গোলাম মোস্তফা জাকির, ইকবাল মাহমুদ অলক মৈত্র: অনিক সাহা, টাইটেল: শাহীনূর রহমান, গানের কথা ও সুর: কাজী নজরুল ইসলাম, কণ্ঠশিল্পী: সিদ্ধার্থ গোলদার, দীপান্তিকা গোলদার, সালমা আকন্দ, সংগীতা পাল, এম এ কাশেম শেখ, মিলন পোদ্দার, রওশন আজমেরী খান, আহমেদ মায়া আকতারী, চমন নাসরিন, মুন্নি কাদের, আহমদ উল্লাহ, আল হোসাইন, নাদিরা বেগম, স্বপন দাস। সংগীত পরিচালনা: শিশির রহমান, চিত্রগ্রহণ: মোঃ নুরুজ্জামান, সম্পাদনা: দীপঙ্কর চৌধুরী, পরিচালনা: পিয়ার মোহাম্মদ।

আরো পড়ুন

“পুতুলের বিয়ে” নাটকের প্রযোজনা

২০১৭ সালে বাঁশরী কাজী নজরুল ইসলাম রচিত “পুতুলের বিয়ে” নাটক ১ম বারের মত মঞ্চায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করে। বাঁশরীর প্রযোজনায় নাটকটি মঞ্চায়ন করে ঢাকা আর্ট থিয়েটার। বাঁশরী প্রযোজিত এ নাটকটির নির্দেশনায় ছিলেন শামস শাহরিয়ার। সংগীতনির্ভর নাটকটির সংগীত পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন মো. বাবুল হোসাইন। পুতুলের বিয়ে শীর্ষক নাটকটির কাহিনী আবর্তিত হয়েছে শিশুদের পুতুল বিয়ে দেওয়ার খেলা নিয়ে। নাটকটির শিশু চরিত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে কমলি, টুলি, বেগম, ঠাকুরমা, কমলির দাদামণি, পঞ্চি, গেদি ও পুরুত ঠাকুর। 

নাটকটির কাহিনী অনুসারে, কমলির দুটি ছেলে পুতুল। বড় ছেলে পুতুলের নাম ফুচুং। তার চেহারা চীনাদের মতো। পুতুল ফুচুং এর এই ‘মন্দ চেহারা’র জন্য কমলি তাকে বিয়ে দেওয়ার জন্য কোথাও মেয়ে খুঁজে পায় না। ফুচুংকে জামাই করার ব্যাপারে এক কন্যার মা পঞ্চির মন্তব্য, ‘পঞ্চির বেডি অত হস্তা না! ওই চীনা অলম্বুসডারে জামাই করবনি। ওডা দেখবার যেমন ভূতের লাহান, নামও তেমনি রাখছে ফুচুং!’

নাটকের অন্য দুটি চরিত্র টুলি ও গেদি। তাদের ঘরেও রয়েছে বিবাহযোগ্য কন্যা। তা সত্ত্বেও তাদের কেউ কমলির চীনা পুতুলটার সঙ্গে মেয়ে বিয়ে দিতে রাজি নয়। এমনকি তারা মেয়েদের বিষ খাইয়ে মেরে ফেলতেও তারা রাজি, কিন্তু কমলির চীনা গড়নের পুতুল ফুচুং এর সাথে মেয়ে বিয়ে দেবে না। কমলির অন্য ছেলে ডালিম কুমার। তবে সে দেখতে খুবই সুদর্শন। তাই ডালিম কুমারকে মেয়ের জামাই বানানোর জন্য সব মেয়ের মায়েরা উন্মুখ। এক পর্যায়ে এ নিয়ে ঝগড়াও বাঁধে মেয়েদের মায়েদের মধ্যে।

পুতুলের বিয়ে নাটকটির সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ দিক হচ্ছে, এর সম্প্রীতিধর্মী বিষয়বস্তু। এই নাটকটির একটি অসাধারণ গান ‘মোরা এক বৃন্তে দুটি ফুল হিন্দু-মুসলমান, মুসলিম তার নয়নমণি, হিন্দু তাহার প্রাণ’, যাতে হিন্দু-মুসলমানসহ সকল ধর্মের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি ও মিলনের বার্তা নিহিত রয়েছে। নাটকটির মাধ্যমে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকল মানুষসহ নতুন প্রজন্মের মধ্যে সম্প্রীতি ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের বার্তা পৌঁছে দিতে বাঁশরী এই নাটকটি দেশের বিভিন্ন এলাকায় মঞ্চায়ন করেছে।

আরো পড়ুন