কবি নজরুল পার্ক

বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। তাঁর রচনায় উঠে এসেছে এই ‘বাংলাদেশ’, দেশের মানুষ ও প্রকৃতির নানা বিষয়। দ্রোহ, মানবতা, প্রেম ও প্রকৃতি, সাম্য ও অসাম্প্রদায়িকতা তাঁর রচনায় ঘুরে ফিরে এসেছে বার বার। বিশ্বমানবতার পূজারী কাজী নজরুল ইসলামের হৃদয় জুড়ে ছিল বাংলা মায়ের অপরূপ নৈসর্গিক ছবি। তাঁর প্রকৃতিবোধ, পরিবেশ সংরক্ষণ, চিন্তা ও আদর্শকে জনসাধারণের মাঝে পরিচিত করা এবং ছড়িয়ে দেয়া, নজরুল সাহিত্যের প্রতি মানুষকে অধিক আগ্রহী করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ বন্ধু ফাউন্ডেশন (বন্ধু) টাঙ্গাইলের সখিপুর উপজেলার যাদবপুর গ্রামে ‘কবি নজরুল পার্ক’ প্রতিষ্ঠা করেছে। এ উপমহাদেশে কবি নজরুলকে নিয়ে এ ধরনের উদ্যোগ এই প্রথম।

পার্কটির কার্যক্রম শুরু হয়েছে ২০২২ সাল থেকে। প্রায় ৯.৫ একর জমির ওপর সে পার্কে থাকবে নজরুলের কর্ম ও সাহিত্য, প্রকৃতি ও পরিবেশ নিয়ে তার ভাবনাকে প্রদর্শন করার একটি গ্যালারি। এছাড়া পার্কটিতে থাকবে কবি নজরুলের সাহিত্যে উল্লিখিত দুই শতাধিক গাছপালা এবং সেসব গাছপালা সম্পর্কে কবির লেখা পংক্তিমালা। গোলাপ, জবা, দোলনচাঁপা, নার্গিস, চাঁপা, গাঁদা, রজনীগন্ধা, হিজল, তমাল, পলাশ, শিমুল, কামিনী, কনকচাঁপা, পদ্ম, শাপলা, সোনালু, রঙ্গন, অশোক, হেনা, টগর, কাঁঠাল, তাল, নিম, বাতাবিলেবু, গোলাপজাম, দারুচিনি, অশ্বত্থ, বট, সুপারি, বেত, তুলসি, সজিনা ইত্যাদি গাছ। পরিকল্পনা করা হয়েছে প্রায় ১২০ জাতের গোলাপ ও ৫০ জাতের জবা বাগানেরও। জলাশয় তৈরি করে সেখানে লাগানো হবে জলজ গাছপালা।

গাছপালা ছাড়াও চড়ুই, নীলকণ্ঠ, হাঁড়িচাচা, মানিকজোড়, ঘুঘু, পাপিয়া, ছাতারে, ময়না, টিয়া, খঞ্জনা, বাবুই, পানকৌড়ি, পেঁচা, ডাহুক, সারস, জলপায়রা, ফিঙে, চখাচখি, শ্যামা, বউ কথা কও, দোয়েল, চাতক, ময়ূর, কোকিল, বুলবুল, হাঁস, বুনোহাঁস, মাছরাঙা, মরাল, মানিকজোড়, শুকসারি, টুনটুনি ইত্যাদি পাখিরাও ভিড় করেছে নজরুলের গানে। আশা করা যায় পার্কের কাজ সম্পন্ন হলে সেটি হবে প্রাকৃতিক পরিবেশে নজরুল চর্চার একটি মনোরম কেন্দ্র, বিনোদনের স্থান ও এসব প্রাণীর এক অভয়াশ্রম। 

কবি নজরুল পার্ক ভিডিও